রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১২:০০ am
শহিদুল ইসলাম (নিজস্ব প্রতিবেদক) নাচোল :
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলায় রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের আওতায় আম উৎপাদনকারীদের সাথে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ উপলক্ষে ২৬ জুন সোমবার সকাল ১০টায় উপজেলার নিজামপুর ইউনিয়নের কেন্দুয়া রফিকুল ইসলামের আমবাগানে এ মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বাদল চন্দ্র বিশ্বাসের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক ডক্টর শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, রাজশাহী অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক শামসুল ওদুদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জের উপ-পরিচালক ডক্টর পলাশ সরকার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ হটিকালচারের উপ-পরিচালক ডক্টর বিমল কুমার প্রামানিক, উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মিথিলা দাস, উপজেলা কৃষি অফিসার বুলবুল আহম্মেদ ও কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মোঃ আব্দুন নূর।
কৃষি উদ্যোক্তা রফিকুল ইসলামের ৩০০ বিঘা জমিতে আমাগান রয়েছে। এর মধ্যে ১০০ বিঘা গৌড় মতি, ১০০ বিঘা কাটিমন এবং ১০০ বিঘাতে বারিফোর ও বেনানা জাতের আম গাছ রয়েছে।
বিশেষ ব্যবস্থাপনায় আম উৎপাদন করেছেন তিনি। কারণ এসব আম বিদেশে যাবে তিনি রপ্তানির জন্য আম উৎপাদন করতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রদর্শনী আমবাগান, সার, ফলের ব্যাগ সহ ফ্রুট ব্যাগ, নানা কৃষি উপকরণ পেয়েছেন। সে সাথে পেয়েছেন বিশেষ প্রশিক্ষণ।
রপ্তানির আমের জন্য বিশেষ যত্ন দরকার হয়। আমের শত্রু মাছি ও পোকা। এই পোকা ঠেকাতে আমের বয়স ৪৫ থেকে ৫০ দিন হলেই ফ্রুট ব্যাগ পরাতে হয়। একটি নির্দিষ্ট সময় পর আম পাড়তে হয়। তিনি আরো বলেন, নাচোলে প্রায় ছয় জনেরও বেশি উৎপাদক রয়েছেন ইতিমধ্যে সুইডেনে প্রায় ৪৪০০ কেজি আম পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে নাচোল উপজেলা কৃষি অফিস আমাদের সার্বক্ষণিক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন।
রপ্তানি যোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, বিদেশে আমাদের আমের বিরাট বাজার রয়েছে। এবার আমরা গতবছরের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি অর্থাৎ চার হাজার মেট্রিক টন আম রপ্তানি করতে চাই। তার জন্য খামারিদের সহায়তা দেওয়া হয়েছে । এতে করে আগামীতে আমরা আম রপ্তানিকারক দেশের শীর্ষ তালিকায় যেতে চাই।
উৎপাদককারী রফিকুল ইসলাম বলেন, বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলে একটি মোড়ক জাতকরণ কারখানা থাকা দরকার। কারণ দূর থেকে আম এনে মান ধরে রাখা সম্ভব হয় না।
প্রধান অতিথি ডক্টর শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার বলেন, স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টি গুণের দিক দিয়ে বাংলাদেশের আমের মান ভালো বলে মনে করেন কৃষিবিদরা। বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের আমের চাহিদা রয়েছে, বিশেষ করে বিদেশে থাকা প্রায় এক কোটি বাংলাদেশি একটা বড় বাজার হয়েছে কিন্তু বাংলাদেশ থেকে আম রপ্তানির পরিমাণ খুব কম।
বাংলাদেশে বছরে প্রায় ১২ লাখ টনের বেশি আম উৎপাদিত হয়। তবে রপ্তানি কম। বাংলাদেশের ৯৩০ জন কৃষি উদ্যোক্তা এ মৌসুমে বিদেশে রপ্তানির জন্য বিশেষ ব্যবস্থাপনায় আম উৎপাদন করছেন। এ কাজটি হচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের আওতায়।
প্রকল্পের লক্ষ্য প্রাথমিকভাবে ৯৩০ উদ্যোক্তাকে বেছে নেওয়া হলেও আগামী চার বছরের মধ্যে সংখ্যাটি প্রায় ১০ হাজার জনে উন্নিত করা হবে। বিভিন্ন দেশের প্রবাসী বাংলাদেশীরাই প্রধানত সব আমের প্রধান ক্রেতা।
উন্নত চাষাবাদ পদ্ধতি ও পরিচর্যার মাধ্যমে রপ্তানির উপযোগী আমের উৎপাদন বৃদ্ধি করার সুযোগ রয়েছে। এতে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানি করে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। রপ্তানি যোগ্য আমের উৎপাদন বৃদ্ধিতে করণীয় বিষয়গুলো মেনে চলতে হবে।
এদেশের মাটি, জলবায়ু ও ভৌগোলিক অবস্থান উপযোগী এবং শ্রমিকের সহজলভ্যতা থাকায় গুণগতভাবে উৎকৃষ্ট আম উৎপাদন সম্ভব। আন্তর্জাতিক বাজারে আমের স্থায়ী রপ্তানি বাজার রয়েছে এবং এথনিক ও নিচি মার্কেটের সুবিধা ও রয়েছে। এ লক্ষ্যে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিশেষ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, আমদানি রপ্তানি বুরো এবং হটেক্স ফাউন্ডেশনকে সক্রিয় হতে হবে। রা/অ