রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১২:৪৮ am
নিজস্ব প্রতিবেদক, তানোর :
রাজশাহীর তানোর উপজেলার সীমান্তবর্তী মোহনপুর উপজেলার ঘাষিগ্রাম ইউনিয়নের মরার বিলে নীতিমালা লঙ্ঘন ও তিন ফসলী জমি ধ্বংস করে অবৈধ পুকুর খননের অভিযোগ উঠেছে। দিনরাত সমানে এসব অবৈধ পুকুর খনন করা হলে অজ্ঞাত কারণে প্রশাসন নির্বিকার। এ ঘটনায় কৃষকদের মাঝে চরম ক্ষোভ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
ক্ষমতাসীন দলের নেতারা প্রভাব বিস্তার করে এভাবে নির্বিচারে তিন ফসলি জমি ধ্বংস করায় সাধারণ মানুষের মাঝে আওয়ামী লীগের চরম ইমেজ সঙ্কট দেখা দিয়েছে। উঠেছে সমালোচনার ঝড়। যেখানে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা রয়েছে এক ছটাক কৃষি জমি নষ্ট করা যাবে না। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা উপেক্ষা করে সেই দলেরই দায়িত্বশীল নেতা কি ক্ষমতার জোরে কৃষি জমি ধ্বংস করছে। তাহলে এরা কি প্রধানমন্ত্রীর থেকেও শক্তিশালী এমন প্রশ্ন সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসির। এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কৃষি জমি ধ্বংসের প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন তৃণমুলের নেতাকর্মীরা। অন্যদিকে খাদ্য ঘাটতি ও গবাদিপশুর চারনভূমি সঙ্কটে সাধারণ মানুষের জীবন ধারণে বিরুপ প্রভাব পড়বে, এর দায় নিবে কে ? তারা দ্রুত এসব পুকুর খনন বন্ধ, ফসলি জমি রক্ষা ও জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও অধ্যক্ষ মফিজ উদ্দিন কবিরাজ এবং উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা আব্দুর রাজ্জাক কৃষি জমি ধ্বংস করে এসব পুকুর খনন করছেন। অথচ এসব কৃষি জমি রক্ষা ও অবৈধ পুকুর খনন বন্ধের জন্য কৃষকরা একাধিকবার উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। কিন্তু কোনো ফায়দা হয়নি। সমানে কৃষি জমি ধ্বংসের মহোৎসব চলছেই।
জানা গেছে, গত ২ ফেব্রুয়ারী বৃহস্প্রতিবার উপজেলার আমরাইল বিলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালিয়ে কৃষি জমিতে পুকুর খননের অপরাধে ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে কাজ বন্ধ করে দেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) প্রিয়াঙ্কা দাস। এছাড়াও গত ২৫ মে বৃহস্পতিবার ভ্রাম্যমান অভিযান পরিচালনা করেন মোহনপুর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) প্রিযাংকা দাস। এ সময় পুকুর কাটা যন্ত্রের চালকসহ দুইজনকে আটক করে। পরবর্তীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে পুকুর খননকারির ৩০ হাজার টাকা জরিমানা আদায়ের পর আটককৃতরা মুক্তি পাই।
কিন্তু অজ্ঞাত কারণে মরার বিলে কোনো অভিযান করা হচ্ছে না হেতু কি ? তবে এরা আইনের উর্ধে কি?
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মরার বিল ও গোছা-কেশরহাট রাস্তায় দেশীয় অস্ত্র সজ্জিত বাহিনীর পাহারা বসিয়ে পুকুর খননের কাজ করা হচ্ছে। রাতের আঁধারে বাহিনীর তৎপরতায় জনমনে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এবিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রিয়াঙ্কা দাস বলেন, তিসি এব্যাপারে অবগত নন। তিনি আরও বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এবিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও মোহনপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মফিজ উদ্দিন কবিরাজ এবং ছাত্রলীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাকের কোনো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। রা/অ