শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ০৮:৪৬ pm
ডেস্ক রির্পোট :
চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। হাজারো কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও শুভাকাঙ্ক্ষীর অশ্রু জলে শেষ বিদায় নিলেন দেশের এই কিংবদন্তি।
শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) জুমার নামাজের পর দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের পিএইসএ মাঠে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর পঞ্চম এবং শেষ জানাজা সম্পন্ন হয়। এরপর বিকেল ৩টায় নিজ হাতে গড়া গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সূচনা ভবনের সামনে তাকে দাফন করা হয়।
জানাজা ও দাফনে রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মী, শিক্ষার্থী, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ হাজারো মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ফ্রিজিং ভ্যানে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মরদেহ পৌঁছে। শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে মরদেহ সকলের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য রাখা হয়। জুমার নামাজের আগ পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ তার মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ছেলে বারিক চৌধুরী বলেন, আমার মরহুম বাবার সঙ্গে কারও কোনো লেনদেন যদি থেকে থাকে কিংবা কেউ কিছু পেয়ে থাকলে তারা যেন আমার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
তিনি বলেন, আমার বাবা মেডিকেল সায়েন্সের কল্যাণে দেহ দান করে যেতে চেয়েছিলেন। আমরা বাবার স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করেছিলাম। আমরা প্রতিষ্ঠিত দুটি প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করেছিলাম। কিন্তু তারা বাবাকে অনেক শ্রদ্ধা করেন। তারা বলেছেন আমার বাবার শরীরে কেউ ছুরি চালাতে পারবে না। শ্রদ্ধার জায়গা থেকে তারা বলেছেন। এমন সময়ও আমরা আমাদের চেষ্টা চালিয়েছি।
এর আগে ধানমন্ডির বাসভবনে প্রথম, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে দ্বিতীয়, শহীদ মিনারে তৃতীয় ও রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর চতুর্থ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
গত মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাতে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
জানা গেছে, জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার কোয়েপাড়া গ্রামে। তার বাবা হুমায়ন মোর্শেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা আর মা হাছিনা বেগম চৌধুরী ছিলেন গৃহিণী। মা–বাবার ১০ সন্তানের মধ্যে জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন সবার বড়। ১৯৭১ সালে জাফরুল্লাহ চৌধুরী যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরে ভারতের আগরতলায় গেরিলা প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে তা পরিচালনা করেন।
মুক্তিযুদ্ধের পর সেই হাসপাতালের নামেই একটি প্রতিষ্ঠান গড়তে চেয়েছিলেন। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে আলোচনা করে নাম ঠিক করেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। হাসপাতালের পাশাপাশি ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানিও গড়েছেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ১৯৮২ সালে দেশে প্রথমবারের মতো ঔষধ নীতি প্রণয়নেও তার ভূমিকা ছিল। সূত্র : যুগান্তর