রবিবর, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১২:০৩ am
ডেস্ক রির্পোট :
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম। গত বছরের মার্চ মাসে নাচোলে অতিরিক্ত সমবায় কর্মকর্তা হিসাবে যোগদান করার পর ঘুসবাণিজ্যসহ নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন। সমবায় অফিসারের ঘুসবাণিজ্য প্রমাণিত হওয়ার পরও কীভাবে বহাল তবিয়তে দায়িত্ব পালন করছেন শফিকুল ইসলাম তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উপজেলার সমবায়ীরা।
ঘুসবাণ্যিজ্য প্রমাণিত হওয়ার পর এখনো তিনি ঘুস ছাড়া কোনো কাজ করেন না।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী উপজেলার নেজামপুর ইউপির কামার জগদইল গ্রামের মামুন জানান, গত মঙ্গলবার নাচোল উপজেলায় জলমহাল ইজারা দাখিল কেন্দ্র করে প্রত্যয়নপত্র নিতে শফিকুল ইসলামের দপ্তরে যান তিনি। সমবায় অফিসার শফিকুল ইসলাম প্রত্যয়নপত্রের জন্য এক হাজার টাকা ঘুস দাবি করেন। প্রথমে মামুন ঘুস দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে প্রত্যায়নপত্র ঘুস ছাড়া দেওয়া যাবে না বলে সমবায় অফিসার সাফ জানিয়ে দেন। নিরুপায় হয়ে মামুন এক হাজার টাকা ঘুস দিয়ে অবশেষে প্রত্যয়নপত্র নেন।
অন্যদিকে একই দিনে নাচোল বাজারের কামরুল ইসলাম একটি সমিতির জন্য প্রত্যয়নপত্র নিতে গেলে সমবায় অফিসার শফিকুল ইসলাম প্রত্যায়নপত্রে ১৫০০ টাকা ঘুস দাবি করেন। কামরুল ইসলাম ঘুসের ১৫০০ টাকা না দিতে পারায় তাকে আর প্রত্যয়নপত্র দেননি সমবায় অফিসার।
নাচোল পৌর এলাকার সমবায়ী সোহেল রানা জানান, গত মঙ্গলবার উপজেলা সমবায় অফিসার শফিকুল ইসলামের দপ্তরে আমি একটি সমবায় সমিতির প্রত্যয়নপত্র নিতে গেলে শফিকুল প্রত্যয়নপত্রের জন্য এক হাজার টাকা ঘুস নেন। ঘুস ছাড়া তিনি প্রত্যয়নপত্র দিচ্ছেন না।
এদিকে গত ২৭ জানুয়ারি একটি পত্রিকায় টাকা ছাড়া ফাইল নড়েনা নাচোল সমবায় কর্মকর্তার শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সেই সংবাদ প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রণালয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সমবায় অফিসার মো. আকরাম হোসেনকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন।
গত ২ ফেব্রুয়ারি জেলা সমবায় কর্মকর্তা নাচোল উপজেলা সমবায় অফিসে ভুক্তভোগীদের সাক্ষাৎকার নেন। তদন্তে উপজেলার আমজোয়ান গুচ্ছগ্রাম ভূমিহীন সমবায় সমিতির সভাপতি আনারুল ইসলামের নিকট সমিতির নিবন্ধনের নামে সমবায় কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামের ঘুসগ্রহণের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিভাগীয় সমবায় অফিসের যুগ্ম নিবন্ধক বরাবর জেলা সমবায় কর্মকর্তা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
এ বিষয়ে নাচোল উপজেলা সমবায় অফিসার (অতিরিক্ত) শফিকুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সমবায়ীদের কাছে সমিতির প্রত্যয়নপত্র নিতে কোনো অতিরিক্তি টাকা নেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে রাজশাহী বিভাগীয় সমবায় অফিসের যুগ্ম নিবন্ধক নূরন্নবী যুগান্তরকে বলেন, শফিকুল ইসলামের অনিয়ম, ঘুসবাণিজ্য বিষয়টি তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। তার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সূত্র : যুগান্তর