শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:১৮ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক :
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ঝিকরা ইউনিয়নের মরুগ্রামে পুকুরে মাছ চুরির অভিযোগে দায়ের করা মামলার বাদিকে প্রাননাশের হুমকি ও এলাকা ছাড়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে ওই মামলার বাদি বড়বিহানালী ইউনিয়নের মন্দিয়াল গ্রামের মৎস্য ও ফিড ব্যবসায়ী মামুনুর রশিদ মামুন চরম নিরাপত্তহীনতায় ভূগছে বলে জানা গেছে। পুলিশ মাছ চুরির জালসহ বিভিন্ন আলামত উদ্ধার ও এক আসামীকে গ্রেফতার করলেও মূল হোতারা এখনো রয়েছে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে।
এদিকে মাছ চুরির মামলায় পুলিশ পাঁচ আসামীর মধ্যে দক্ষিণ মরুগ্রামের বাবুল হোসেন এর ছেলে লিটন নামের একজন কে গ্রেফতার করলেও সে জামিনে এসে অপর আসামীদের সঙ্গে নিয়ে মাছ ব্যবসায়ী মামুনুর রশিদ মামুন কে হত্যার হুমকি ও এলাকা ছাড়ার ভয় ভীতি দেখিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, বাগমারা উপজেলার বড়বিহানালী ইউনিয়নের মন্দিয়াল গ্রামের মানিক প্রামানিক এর ছেলে মামুনুর রশিদ মামুন পার্শ্ববতি ঝিকরা ইউনিয়নের মরুগ্রামে তার শ্বশুড়বাড়ি এলাকার ইয়াকুব দেওয়ানের কাছ থেকে একটি পুকুর তিন বছর মেয়াদী লিজ নিয়ে বিভিন্ন জাতের মাছ চাষ করে আসছেন। ওই এলাকায় আরো চারটি পুকুরে মাছ চাষ করছেন তিনি। অভিনব কায়দায় ওই চক্রটি রাতের আঁধারে অন্যের পুকুরের মাছ চুরি করে তাদের নিয়ন্ত্রিত পুকুরে রেখে দিচ্ছে। এছাড়াও দুরের আড়ত গুলোতে বিক্রিও করে দিচ্ছে।
গত বুধবার (১মার্চ) দিবাগত রাতে মামুনুর রশিদ মামুনের একটি পুকুরে মাছ চুরির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে মাছ চাষী মামুনুর রশিদ ঘটনাস্থলে যায়। বিষয়টি স্থানীয় ঝিকরা পুলিশ ক্যাম্পে অবগত করালে পুলিশও ঘটনাস্থলে গিয়ে মাছ চুরির ঘটনা জানতে পারে। এর মাঝে অভিযুক্তরা পুকুর মালিকের কাছে এসে নিজেদের দোষ শিকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করে বলে জানা যায়।
স্থানীয়রা জানান, ঝিকরা ইউনিয়নের ওই এলাকায় মাছ চুরির একটি সংঘবদ্ধ সক্রিয় সিন্ডিকেট রয়েছে। যার মুল হোতা মরুগ্রামের আসাদুল ইসলামের ছেলে আতাউর রহমান। অচিরেই ওই সিন্ডিকেট কে আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবী জানান এলাকাবাসী। এর আগেও তাদের বিরুদ্ধে এলাকায় মাছ চুরি, ছিনতাই ও অন্যান্য অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। তারা এলাকায় প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট গড়ে তোলায় অনেকেই ভয়ে তাদের অপরাধের বিরুদ্ধে মুখ খোলেনা। তাদের অত্যাচারে অনেকেই গ্রাম ছাড়া হয়ে ঢাকায় বসবাস করছে।
বারুইপাড়া গ্রামের এক ভূক্তভোগী জানান, বিলের মধ্যে এক পুকুর পাহারা দেয়ার সময় তাকে গলায় ছুরি ধরে জিম্মি করে নব্বই হাজার টাকা মুক্তিপন আদায় করে। বিষয়টি জানাজানি হলে পরে সালিশের মাধ্যমে মিমাংসা করা হয়।
রায়নগর গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ভূক্তভোগী বলেন, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ভাই হবার সুবাদে আসাদুল ইসলাম তার ছেলে আতাউরসহ অন্যদের এলাকায় একটি সিন্ডিকেট তৈরী করেছেন। ওই সিন্ডিকেটই এলাকায় চুরি, ডাকাতিসহ নানা অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। তাদের ভয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস পায়না বলেও জানান তিনি।
এদিকে মাছ চাষী মামুনুর রশিদ শুক্রবার (৩মার্চ) মরুগ্রামের আসাদুল ইসলামের ছেলে আতাউর রহমানসহ পাঁচজন কে আসামী করে বাগমারা থানায় মামলা দায়ের করলেও পুলিশ লিটন নামের এক আসামী কে গ্রেফতার করলেও অন্যদের এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি।
ভূক্তভোগী মাছ ব্যবসায়ী মামুনুর রশিদ মামুন বলেন, ওই এলাকায় আমি কি করে মাছ চাষ করি তা তারা দেখে নেবে। আমার বাড়ি থেকে মাছ চাষের পুকুর গুলো দূরে হওয়ায় আসামীরা আমাকে এলাকা ছাড়ার এবং প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে। আমি দ্রুত আসামীদের আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচার দাবী করছি এবং প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা দাবী করছি।
ঝিকরা ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মানিক প্রামানিক বলেন, ঝিকরা ইউনিয়নের বিভিন্ন পুকুরে মাছ চুরির ঘটনা ঘটছে। উপজেলার সিমান্তবর্তি ঝিকরা ইউনিয়ন এবং পার্শ্ববতি আত্রাই উপজেলার কিছু সদস্য নিয়ে এলাকায় একটি অপরাধী সিন্ডিকেট গড় উঠেছে বলে শোনা যাচ্ছে। তারাই এলাকায় চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রায়হান সিদ্দিকী বলেন, ওই ঘটনায় একজন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। রা/অ