শনিবর, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, সময় : ১০:৪৬ pm
নিজস্ব প্রতিবেদক, মোহনপুর : রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার রায়ঘাটি ইউনিয়নের লালোইচ গ্রামবাসী আগুন ও এ্যাসিড সন্ত্রাসের ভয়ে আতঙ্কিত। কয়েক দিনের ব্যবধানে পুড়েছে ৮টি খড়ের পালাসহ দুটি বসতবাড়ি। এ্যাসিড দগ্ধ হয়েছে স্কুল ছাত্র। অপরাধী সনাক্ত না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছেন গ্রামবাসী।
সরজমিনে লালোইচ গ্রামে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনেক আগে থেকে মানুষের বাড়ির সামনে পায়খানা করা হতো, এরপর হঠাৎ করে রাতে আধারে জ্বালানো হচ্ছে ভয়াবহ আগুন। প্রথমে গত মাসে একটি খড়ের পালায় আগুন ধরিয়ে দেয় দুষ্কৃতকারিরা। তার কিছুদিন পর গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১ টার দিকে খড়ের ঘরসহ বসতবাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে গ্রামবাসীর সাথে আগুন নেভাতে সহযোগিতা করে মোহনপুর উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। ওই রাতের পর এখন একদিন/দুইদিন পর পর আগুন দিয়ে বাড়িসহ খড়ের পালা পোড়ানো শুরু হয়েছে। গত ৯ অক্টোবর সন্ধ্যা ৭ টা ১৫ মিনিটে বড়াইল উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী গ্রামের ইসাহাক আলীর ছেলে সাহারিয়ার সিহাবকে জানালা দিয়ে এ্যাসিড জাতীয় পদার্থ নিক্ষেপ করে সেই দুষ্কৃতিকারিরা। এর পরের দিন ১০ অক্টোবর নজের আলীর খড়ের পালায় আগুন দেয় তারা।
স্থানীয়রা ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ড সদস্য জেকের আলীর মাধ্যমে থানা পুলিশকে অবহিত করে গ্রামবাসী। একাধিবার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও অপরাধী চিহ্নিত হয়নি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। থানা পুলিশের পরামর্শে গ্রামবাসীরা পাহরা দেওয়া ব্যবস্থার পরেও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে আতঙ্কিত সর্বসাধারণ।
তিনি জানান, বেশকিছু দিন ধরে কারো বাড়ি অথবা কারো খড়ের পালায় আগুন, বাড়িতে এ্যাসিড নিক্ষেপ করা হচ্ছে। প্রায় বাড়ির গেটে পায়খানা করে রাখা হচ্ছে। মোহনপুর থানা পুলিশের সহযোগিতায় গ্রামে পাহরার ব্যবস্থা করা হলেও এখন পর্যন্ত ধরা পড়েনি দুষ্কৃতিকারীরা, জানাও যায়নি কারা এধরণের ঘটনার সঙ্গে জড়িত। চরম আতঙ্কে রয়েছেন গ্রামবাসী। অপরাধীদের খুঁজে বের করতে প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
পর্যায়ক্রমে মোহনপুর থানার এস.আই ধীমান মন্ডল, এস.আই জাহেদ শেখ, এস.আই পারভেজ রানাসহ পুলিশ সদস্যের তৎপরতার পর ১২ অক্টোবর বিকালে মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এঘটনায় পুলিশ তৎপর রয়েছে। প্রতিনিয়ত পুলিশ গ্রামবাসীর সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এরই প্রেক্ষিতে ইউপি চেয়ারম্যানসহ গ্রামবাসীর সঙ্গে বুধবার বিকালে আমরা আলোচনা করেছি। গ্রামের লোকজনকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। গ্রামবাসীর সহযোগিতায় এঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।
এবিষয়ে মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা ফাতেমাতুজ্ জোহরা বলেন, ঘটনাটি অনেক আগে থেকে ঘটে আসছিলো, আমি দুই দিন আগে অবগতি হয়েছি। ঘটনাস্থলে নজরদারি বৃদ্ধির জন্য মোহনপুর থানা পুলিশকে নির্দেশনা প্রদান করেছি। আশা করছি অপরাধীদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
এছাড়া রায়ঘাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবলু হোসেন একাধিকবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, লালোইচ একটি বৃহৎ গ্রাম। বেশ কিছুদিন ধরে কে বা কারা বাড়িঘরসহ খড়ের পালা পুড়িয়ে দিচ্ছে। অচিরেই থানা পুলিশের সহযোগিতায় অপরাধীরা আইনের আওতায় আসবে বলে আশা করেন তিনি। মা/মো